• রবিবার, ৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪২৯

সারা দেশ

কালীগঞ্জ সড়কের বেহাল দশা,ভোগান্তিতে সাধারন মানুষ

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

কালীগঞ্জ(ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি:

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌরসভার একটি সড়ক সংস্কারের দুই বছরের মধ্যেই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কের কমপক্ষে ১৫টি স্থানে বড় বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এ সড়ক দিয়ে চলাচল করতে মানুষ ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌরসভার নিমতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে মুরগীহাটা পর্যন্ত ৪৫০ মিটার দীর্ঘ সড়ক মেরামতের জন্য দুই বছর আগে ৭৬ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়। ঠিকাদার সংস্কার কাজে অনিয়ম করায় সড়কটি এখন বেহাল দশায় পরিনত হয়েছে।

কালীগঞ্জ বাজার থেকে প্রধান বাসস্ট্যান্ড অভিমুখে সড়কের পুরোনো সেতুটি মেরামতের কাজ চলছে। যে কারণে ওই সড়ক বন্ধ রয়েছে। ফলে মূল বাজার থেকে নিমতলা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত সড়কটি বর্তমানে যান চলাচলের একমাত্র সড়ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর সেই সড়কের এই অবস্থায় সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। বর্তমানে এই সড়কটি যেন এক মরন ফাঁদে পরিনত হয়েছে। এই সড়ক টিতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। এই অবস্থা ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌরসভার নিমতলা বাসষ্টান্ড থেকে বাজার অভিমুখে সড়কটির মাত্র ৪শ ৫০ মিটার পাঁকা সড়ক মেরামতের জন্য বরাদ্ধ ৭৬ লাখ টাকা। এই বিপুল অর্থ ব্যয় করে শুধুমাত্র সংষ্কার করা সড়কটি দুই বছরেই ভেঙ্গেচুরে চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। সড়কের কমপক্ষে ১৫ টি স্থান ভেঙ্গেচুরে বড় বড় গর্ত তৈরী হয়েছে। সরু এই সড়কের পিচঢালাই উঠে যাওয়ায় স্থানে স্থানে তৈরি হয়েছে ছোটবড় অসংখ্য খানা-খন্দ। ভাঙা রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে রিকশা ও অটোরিকশার যাত্রীরা যেমন নাকাল হচ্ছেন, তেমনি বাড়ছে যানজট। পাশাপাশি সামান্য বৃষ্টিতে পানি জমে সড়কে। কালীগঞ্জ বাজার থেকে মেইন বাসষ্টান্ড অভিমুখে সড়কের পুরাতন সেতুটি মেরামতের কাজ চলছে। যে কারণে ওই সড়ক বন্ধ রয়েছে। ফলে মূল বাজার থেকে নিমতলা বাসষ্টান্ডটি বর্তমানে যানচলাচলে একমাত্র সড়ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর সেই সড়কটির এই অবস্থায় সাধারণের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

কালীগঞ্জ পৌরসভার মূল বাজারের প্রবেশের ৫ টি প্রধান সড়ক রয়েছে। আর এই মূল বাজার এলাকায় বেশির ভাগ সড়ক গুলো সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধিনে। মূল বাজার থেকে একটি সড়ক দক্ষিনে বেরিয়ে গেছে মেইন বাসষ্টান্ডের দিকে, যেটি সড়ক বিভাগের। আরেকটি সড়ক পূর্বে বেরিয়ে মাগুরার আড়পাড়া, ঝিনাইদহ, গান্না বাজার অভিমুখে চলে গেছে। উত্তরে মুরগীহাটা হয়ে কলেজ রোড ঝিনাইদহ দিকে গেছে। এগুলো সবই সড়ক বিভাগের এবং তারা গত ৩ বছর পূর্বে এগুলো সংষ্কার করে চলাচলের উপযোগী করে তুলেছেন। এখনও সড়ক গুলো ব্যাবহার উপযোগী ও দৃষ্টিনন্দন হয়ে রয়েছে। শহরের নিমতলা থেকে থানার সামনে দিয়ে মুরগীহাটা মোট পর্যন্ত সড়কটি পৌরসভার। এটি মাত্র সাড়ে ৪ শত মিটার। যে সড়ক গত ২ বছর পূর্বে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ সংষ্কার করে, কিন্তু ভেঙ্গেচুরে আবার ব্যবহার অনুপযোগি হয়ে পড়েছে।

শহরের সরকারি নলডাঙ্গা ভুষন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মোবারক আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সলিমুননেছা বালিকা বিদ্যালয়ম সরকারি মাহাতাব উদ্দিন ডিগ্রী কলেজ, ভুষন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আসা যাওয়ার একমাত্র যাতায়াতের রাস্তা। কালীগঞ্জ থানা, উপজেলা, রেজিষ্ট্রি অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরের একমাত্র সড়ক। কিন্তু চলাচলে একেবারেই অনুপয়োগি হয়ে পড়েছে।

কালীগঞ্জ পৌরসভার প্রকৌশল বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, সড়কটি মেরামতের জন্য ৭৬ লাখ টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে দরপত্র আহবান করা হয়েছিল। ১৫ দিনের মধ্যে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছিল, কাজটি পেয়েছিলেন ঝিনাইদহের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স শহর এন্টার প্রাইজ। কিন্তু কাজটি করেন ঝিনাইদহের ঠিকাদার আতিয়ার রহমান। ২০১৯ সালে কার্যাদেশ দেওয়া হলেও করোনার কারণে কাজ করা সম্ভব হয়নি। পরে ২০২০ সালের শেষ সময়ে কাজটি শেষ করা হয়েছে। সড়কের দুই পাশে কিছুটা বৃদ্ধি করে ১ ইঞ্চি পাথর দিয়ে কার্পেটিং করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তারা। শহরের একাধিক মানুষ বলেন,কাজ শেষ হওয়ার কয়েকদিন পরই সড়কের বিভিন্ন স্থানে পিচ-পাথর উঠতে শুরু করে। গত দুই বছরে এখন বড় বড় গর্তে পরিনত হয়েছে। এই সড়কের পশ্চিম মাথায় সড়ক বিভাগ কাজ করেছেন, তাদের রাস্তা আর এই রাস্তা দেখলে বোঝা যায় এই কাজে কতটুকু অনিয়ম করা হয়েছে। তিনি বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন সড়কটির উপরের অংশ খুড়ে ফেলে পুনরায় ১ ইঞ্চি কার্পেটিং করার কথা ছিল। কিন্তু ঠিকাদার সেভাবে করেনি, নাম মাত্র কার্পেটিং করে চলে গেছেন। যে কারণে অল্প দিনেই উঠে যেতে শুরু করে। এখন যা বৃহৎ আকার ধারন করেছে। কিন্তু সড়কের অবস্থা এতোটা খারাপ হওয়ায় চলাচল করা খুবই কষ্টকর হয়ে পড়েছে প্রতিদিন সড়কে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। মাঝে মধ্যে পথচারীরা যানবাহনকে পাশ কাটাতে গিয়ে গর্তে পড়ছে। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত অটোরিকশা ও রিকশা চলাচল করে। শহরের বড় মার্কেট যাতায়াতের জন্যও ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা এই রাস্তা ব্যবহার করেন। সড়কটির কোথাও পিচঢালাই উঠে ইট ও ইটের খোয়া বেরিয়ে এসেছে। সেই সঙ্গে পানি জমে আছে খানা-খন্দে। রাস্তার পানি নিষ্কাশনের সুবিধা না থাকায় সকাল থেকেই নালার পানি জমে থাকে এখানে। বৃষ্টির পানি জলাবদ্ধতা প্রকট আকার ধারণ করেছে। এ নিয়ে ভোগান্তিতে পোহাতে হয় এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারী ব্যক্তিদের ও পাশের দোকান ব্যবসায়িদের। রাতে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করা অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে বলে জানালেন স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা। কিন্তু কালীগঞ্জ শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বন্ধ থাকায় এই সড়কে চাপ বেশি পড়েছে। যে কারণে দ্রুত নষ্ট হয়েছে। তবে ঠিকাদার এখনো সম্পূর্ণ বিল পাননি, তাঁকে বলা হয়েছে দ্রুত সংস্কার করতে।

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ পৌরসভার প্রকৌশলী বিভাগের কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান জানান, কাজটি করেছেন ঠিকাদার আতিয়ার রহমান ঠিকাদারের সাথে কথা হয়েছে বর্ষা শেষ হলে রাস্তা পুনরায় মেরামত করবেন। ঠিকাদারের বিল এখনও পরিশোধ হয়নি। রাস্তা পুনরায় সংস্কার করেদিলে তিন বিল পরিশোধ করা হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads